বর্ষায় পায়ের যত্ন


বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভেজার মজাই আলাদা। স্কুল থেকে বা কলেজ থেকে ফেরার সময় যদি বৃষ্টি হয়, তখন কি কেউ আমরা না ভিজে থাকতে পেরেছি? বৃষ্টিতে ভেজার শুধু বাহানা চাই। কিন্তু মজাটা মাটি হয় তখনই, যখন বৃষ্টিতে রাস্তায় জমে থাকা নোংরা জল পায়ে লেগে একাকার হয়ে যায়। এখানেই শেষ নয়। এই নোংরা জল পায়ে লেগে হতে পারে ফুসকুড়ি, চুলকানির মতো নানা ধরনের চর্মরোগ। তাই বলে কি বৃষ্টির আনন্দ উপভোগ করবোনা? করবো তো বটেই। তবে একটু সচেতন থেকে আর নিজের প্রতি যত্নশীল হয়ে। 


পায়ের ক্ষতি: বর্ষা মৌসুমে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে রাস্তায় জমে থাকা জলের সঙ্গে নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ মিশে যায়। আর এই জল পায়ে লেগে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ দেখা দেয়, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা এমনটাই বলে থাকেন । তাই যত সম্ভব বাইরে থেকে ফিরে সঙ্গে সঙ্গে সাবান দিয়ে পা দুটোকে ভালো করে পরিষ্কার করা উচিৎ । বিশেষ করে, গরম জল দিয়ে পা পরিষ্কার করলে তো খুবই ভালো হয়।

পায়ের যত্নআত্তি: পায়ের ওপর যেন আমাদের সবচেয়ে বেশি অবহেলা। অথচ পায়ের ওপর চাপ কিন্তু সবচেয়ে বেশি পড়ে। আর বর্ষাকালে তো কাদা-জলে পা মাখামাখি করে একাকার হয়ে যায়। বর্ষায় পায়ের যত্ন একটু বেশিই নিতে হয়। এক্ষেত্রে যা করতে হবে - 
প্রথমত, বাড়িতে ফিরে পা দুটোকে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর গরম জলে কয়েক দানা খাওয়ার সোডা মিশিয়ে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার লবণ বা চিনির উপাদান মিশ্রিত স্ক্রাব দিয়ে পরিষ্কার করে জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। পাতলা কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে পা মুছে নিয়ে পরে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশন দিয়ে মাসাজ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, চায়ের পাতা মিশ্রিত গরম জলের মধ্যে পা দুটিকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। দুই চামচ চিনি আর এক চামচ মধু মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে পায়ে ম্যাসাজ করতে হবে। কিছুক্ষণ পর পা ধুয়ে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশন লাগাতে হবে। তবে যাঁদের অ্যালার্জির লক্ষণ আছে, তাঁরা জলপাই তেল অল্প গরম করে পায়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে পা আরও নরম হবে। পায়ে লোশন মেখে  সূতির মোজা পরে থাকুন।

Follow Me on Pinterest
পায়ের নখের প্রতি আলাদা যত্ন: ফ্যাশন-সচেতন অনেকেরই বড় নখ পছন্দ। তবে বড় নখ রাখতে হলে এর জন্য দরকার আলাদা যত্ন। কেননা, নখের যত্ন না নিলে বর্ষা মৌসুমে নখের নিচে কাদা-ময়লা জমে জীবাণু-সংক্রমণ হতে পারে। তাই বাইরে থেকে এসে ব্রাশ দিয়ে ঘসে নখের ময়লা পরিষ্কার করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয়, বর্ষায় নখ ছোট রাখা।

যা করবেন না

১।  এই বর্ষায় কাঁদা-জল এড়িয়ে চলুন।
২। কাঁদা লেগে গেলে দ্রুত ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি কোনো রকম জীবাণু-সংক্রমণ হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।

জুতাটা যেমন হওয়া চাই

বর্ষায় জুতা নির্বাচন একটা বড় ঝামেলা। খোলামেলা স্যান্ডেল পরাই ভালো। আর এ সময় বাজারে স্পঞ্জ বা রাবারের এবং খোলামেলা স্যান্ডেল প্রচুর পাওয়া যায়। এই ধরনের জুতা পড়লে পায়ে জল বেশিক্ষণ থেকে না। পা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। তাছার এই ধরনের জুতা সহজে ধুয়ে ফেলা যায়। 
কিছু টিপস

টিপস ১
উপকরণ
এক কাপ ওটমিল ও লেবু রস
আপনার ফুট সফ্টেনিং জন্য,একটি বালতি বা গামলাতে গরম জল নিন। তাতে লেবুর রস এবং ওটমিল যোগ মেশান। ১০ মিনিটের জন্য আপনার পা এতে ডুবিয়ে রাখুন। তারপর ওটমিল দিয়ে ধীরে ধীরে আপনার পা ঘষুন। তারপর গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

টিপস ২
উপকরণ
শুকনো পুদিনা পাতা - ১ টেবিল চামচ
রোজমেরী - ১ চা চামচ
দুধ - ১ কাপ
সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে ফুটিয়ে নিন। ঠাণ্ডা করে এই পেস্টটি পায়ে লাগিয়ে রাখুন। ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার ব্রাশ দিয়ে প্যাকটি ধীরে ধীরে ঘষে তুলুন।
Follow Me on Pinterest
টিপস ৩
উপকরণ
ঘৃতকুমারী জেল - ২ চা চামচ
লেবু রস - ১ চা চামচ
মধু - ১ চা চামচ
ওটস (গ্রাউন্ডেড) - ২ চা চামচ
অলিভ তেল - ১ চা চামচ
চিনি - ২ চা চামচ
সব উপকরণ দিয়ে তৈরি করুন মিক্স ফুট স্ক্রাব।  এই স্ক্রাবারটি সাপ্তাহিক ব্যবধান করে ১৫ মিনিটের জন্য পা ঘষার জন্য ব্যবহার করুন।

টিপস ৪   
উপকরণ
অলিভ তেল - ৩ কাপ
লেবু রস -১ কাপ
দুধ - ১/৪ কাপ
সব উপকরণ গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য পা ডুবিয়ে রাখুন।

টিপস ৫
উপকরণ
পুদিনা রস
লেবু - ৩ টি
বাদাম তেল - ১ চা চামচ
চিনি - ২ চা চামচ
লেবু থেকে রস বের করে, অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রনটি আপনার পায়ে মাসাজ করুন।
এই টিপ্সগুলি মেনে চলুন আর বর্ষা উপভোগ করুন।

লেখাটি ভালো লাগলে লাইক ও শেয়ার করুন