স্বাভাবিক ত্বকের যত্ন কিভাবে নেবেন ?


প্রায়ই অনেক মহিলাদের মধ্যে বিভ্রান্ত দেখা যায় যে তাঁর ত্বকের ধরনটি ঠিক কি, তা তিনি বুঝে উঠতে পারেন না। অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন, কিভাবে তিনি বুঝবেন তাঁর ত্বকের ধরন?

আজকের এই পোস্টটি স্বাভাবিক ত্বক নিয়ে। প্রথমেই বলবো স্বাভাবিক ত্বকের অস্তিত্ব সত্যিই খুব কম। যাদের ত্বক স্বাভাবিক তাঁরা ভাগ্যবান ভাগ্যবতী। কারন এ ধরনের ত্বকে সাধারণত সমস্যা অনেক কম।


এখন প্রশ্ন, কি করে বোঝা যাবে যে ত্বক এর ধরন স্বাভাবিক?
  
"স্বাভাবিক" ত্বক মানেই নিশ্ছিদ্র, নিখুঁত চামড়া। ত্বক না খুব তৈলাক্ত না খুব শুষ্ক। এই ধরনের ত্বকের স্বাভাবিক লক্ষণ হল ত্বক সব সময় moisturized থাকে। ত্বকের কোন প্রকারের blemishes, blackheads, বা ছিদ্র দেখা যায় না। এমনকি চামড়া সব সময় টানটান থাকে। বলিরেখা এই ধরনের ত্বকে দৃশ্যমান নয়।

স্বাভাবিক ত্বকের সমস্যা কম বলে আমরা এই ধরনের ত্বককে অবহেলা করে থাকি। ফলে ত্বক ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিকতা হারিয়ে ফেলে। এর প্রভাব খুব বেশি দেখা যায় একটু বয়স কালে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ত্বক তার  উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে, ত্বকে রুক্ষ ভাব চলে আসে। তাই সময় থাকতে এই ধরনের ত্বকের সঠিক পরিচর্যা করা উচিত।

কি ভাবে পরিচর্যা করবেন ?

এ ধরনের ত্বকে সাধারণত সমস্যা অনেক কম। তাই অনেকে মনে করেন, এ ধরনের ত্বকের আর যত্নের দরকার কি? এমনিতেই ভালো আছে। কিন্তু একটা বয়সের পর ত্বক নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না। তাই এ জাতীয় ত্বকের প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করা উচিত।

সারা দিনে কম করে ৩ থেকে ৪  বার মুখ স্বাভাবিক জল দিয়ে ধোবেন। এতে ধুলোবালি লোম কূপের গোড়ায় আটকে থাকতে পারবে না। ত্বক সজীব মনে হবে।

ত্বকে সাবান ব্যবহার না করে ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন। ভেষজ ফেসওয়াশ হলে তো খুবই ভালো হয়।

যখনই মেকআপ ব্যবহার করবেন তা যেন মশ্চারাইজার যুক্ত হয়। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকবে।

মাঝে মাঝে মুখে গরম জলের ভাপ নিতে পারেন। এতে লোমকূপের গোড়া খুলে গিয়ে তেল-ময়লা জমতে পারবে না এবং ব্রণ হবার আশংকা কমে যাবে।

নিয়মিত মশ্চারাইজার যুক্ত ক্রিম লাগাতে পারেন। যে ক্রিম আপনার ত্বকে স্যুট করবে সেটাই ব্যবহার করবেন।

প্রতি রাতে অবশ্যই খুব ভালো ভাবে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে ঘুমোবেন। 



সপ্তাহে অন্ততপক্ষে ২/৩ দিন ফেসপ্যাক লাগাবেন। ফেসপ্যাক লাগানোর ১৫/২০ মিনিট পরে মুখমন্ডল ভালো ভাবে স্বাভাবিক ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এতে মুখের উজ্জ্বলতা বাড়বে।

স্বাভাবিক ত্বকের জন্যে কয়েকটি ফেসপ্যাক


১/ দুটেব্ল চামচ ঘরে পাতা টক দইয়ের সঙ্গে এক টেব্ল চামচ টোম্যাটোর রস মিশিয়ে সেটা মুখে ও গলায় প্রায় ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নেবে।
২/ একটা গাজর ভাল করে পেস্ট করে তার রস মুখে ও গলায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে জল দিয়ে ধুয়ে নেবে। এর ফলে ত্বক তরতাজা হয়ে ওঠে।
৩/ পাকা পেঁপে এই ধরনের ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এক টুকরো পাকা পেঁপে নিয়ে সেটা মুখে ও গলায় ঘষে নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে জল দিয়ে ধুয়ে নেবে।
৪/ কমলা লেবুর খোসা বাটা,  অলিভ অয়েল কয়েক ফোঁটা খাঁটি মধু  এক সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখমন্ডলে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলবেন।
৫/ মশুরের ডাল বাটা, মধু, কাঁচা দুধ, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে পেস্টের মতো করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর ঠান্ডা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।


এই ফেসপ্যাক থেকে যেকোনো একটি সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহার করতে পারেন।


মুখের পরিচর্যায় সবসময় মনে রাখবেন-
১. যে প্যাকটি আপনার ত্বকের সাথে সব চেয়ে মানিয়ে যাবে সেটি ব্যবহার করবেন।
২. প্রতিদিন ৭/৮ ঘণ্টা ঘুমোনো উচিত।
৩. তেল-মশলা, ভাজা-পোড়া খাবার কম খাবেন।
৪. সব্জি, কাঁচা ফলমূল ও সালাদ বেশি পরিমাণে খাবেন।
৫. জল বেশি করে পান করবেন।
৬. ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি এবং ভিটামিন-ই যুক্ত খাবার প্রতিদিনই খাবেন। এতে ত্বক ভালো থাকবে।
৭. সপ্তাহে অন্তত দু-দিন প্যাক ব্যবহার করবেন।
৮. প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজার লাগানোর সময় ৫ মিনিট হালকাভাবে মুখ ম্যাসাজ করুন।
take care


Follow Me on PinterestFacebook এর আমাদের সঙ্গে থাকুন।